।। বাক্‌ ১২৩ ।। অর্ঘ্য দত্ত বক্সী ।।




অণুপ্রবন্ধ - a compilation of observations - চিন্তাকল্প - an inductor effect - a need of briefness of time

কিছু চিন্তা থেকেই একটি text এর জন্ম হয়। এবার কেউ তাকে গদ্য বানান কেউ বা প্রবন্ধ। যে যে বিষয়ে স্বচ্ছন্দ সেই ভাবেই একটি expression বেরিয়ে আসে। আগে academician/critical আর creative লেখার মধ্যের দূরত্ব কিছুটা কমিয়ে আনতে প্রগদ্য / প্রগল্পের (প্রবন্ধমূলক গদ্য বা গল্প) প্রস্তাবনা এনেছিলাম। এখন আরো একটি এমনই ফর্ম নিয়ে কাজ শুরু করেছি যারও উদ্দেশ্য তথ্যকে যেভাবে academicianরা ব্যবহার করে চাইলে ইচ্ছা করে আমাদের বিভ্রান্ত করতে পারেন তার বিরোধিতা করা। এখানেও academicsকে সাধারণ পাঠকের "হৃদয়ের" কাছে নিয়ে যাওয়া উদ্দেশ্য। সঙ্গে পাঠককে নিরপেক্ষ তথ্য provide করে তাকেই আহ্বান করা যাতে সে তার প্রবন্ধ বানিয়ে নেয়। 
অণুপ্রবন্ধের লক্ষ্যও তাই। যেসব কবি ও পাঠক ভাবেন, চিন্তা করেন, হয়তো অনেক unique বিষয়বস্তুই ভেবে ফেলেন কিন্তু তারা তাকেexpress করেন না text এর আদলে। philosophical কবিতায় চলে যান অনেকটা অপারগ হয়েই। তাদের এমন একটি স্পেস থাকা দরকার যেখানে সেই চিন্তাকে observations গুলোকে তারা সাজিয়ে ২০০ কি ৩০০ শব্দের মধ্যে অণুপ্রবন্ধ বা অণুtext বানাবেন। 
চিন্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিই। জানি কোন চিন্তাই একক চিন্তাখণ্ড
নয়। চিন্তা একটি স্রোত যা সেই ব্যক্তির যে reality ( এমন কি একসাথে বড় হওয়া দুই যমজের রিয়ালিটিও এক নয়, reality is very much like finger print. each person has his own unique reality) তার সঙ্গে সঙ্গে সময়ের প্রবাহের মতো বয়ে চলেছে । তার collective personal unconscious conscious এবং যাবতীয় তার পরিচয়গুলির( হিন্দু ,কায়স্থ, engineer) unconscious conscious বিক্রিয়ায় যে unique চিন্তা তার তাকে ১০০% ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তার নাম দিয়েছি চিন্তাকল্প। তার মধ্যে থেকে যেগুলি খুব কমন যেগুলি বারবার ফিরে ফিরে আসে তারা চিন্তাগুচ্ছরা লেখককে দিয়ে লিখিয়ে নেয় বড় বড় উপন্যাস বা গল্প। 
কিন্তু তাতে নির্মাণ লাগে, তার একটা স্থাপত্য আছে ( শুধু passion দিয়ে একটি ভালো উপন্যাস/গল্প হয় না)। একটি এমন মূলগত চিন্তাই শয় শয় পাতার উপন্যাস হয়েছে এমন উদাহরণ নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। গল্পের ক্ষেত্রে এসে সেই চিন্তাকে আরো কম ভূষণে অলংকৃত করেই পাঠকের কাছে আনা যাচ্ছে। সময়ের দাবিই হল কম সময়ে যা পড়ে ফেলা যায় ও লেখকের বক্তব্য বা চিন্তাকে যত তাড়াতাড়ি বুঝে নিয়ে নিজের বিচার ও thought processএ চলে যাওয়া যায়। চিন্তাকে কবিতায় নিয়ে যেতেও বহু মুন্সিয়ানা লাগে যা কবিতা শিল্পের minimal দাবি। সৌন্দর্য নির্মাণ অনেক হল। ভুলে গেলে চলবে না যে শিল্প এখনও for the betterment of massই করতে হবে। mass কে educate করাই আদর্শ। নতুন কবিতা শুধু পাঠককে আনন্দ দেয়, সেটাও মহৎ কিন্তু যথেষ্ট নয়। 
চিন্তাকে তার স্পার্কস সহ যেভাবে সে এসেছে আর যা যা সংযুক্ত চিন্তাগুলির সঙ্গে রাইজোম্যাটিকভাবে conscious এ নিজেকে কল্পের আকারে ধরা দিচ্ছে তাকে সেই inductive force সহ ও নির্মাণের বাধ্যবাধকতামুক্ত করে যদি কিছু লিখে ফেলি তবে তাই হোক অণুপ্রবন্ধ, অণুtext. এর মাধ্যমে অন্তত অনেক বেশি মানুষকে যাদের হয়তো বড় গল্প লেখার মুন্সিয়ানা নেই তাদের ভাবুক হতে প্রাকটিস করানো যাবে। আর মানুষ অনেক বেশি নিজের চিন্তাকে একেবারে শুদ্ধভাবে প্রকাশ করে ও আদানপ্রদান করে নেবে অতি দ্রুত। একেবারে সাধারণ পাঠকের জ্ঞান ও চিন্তার বিকাশ হবে নিয়মিত চর্চা হবে তাও ন্যূনতম কবি লেখক license ছাড়াই। চিন্তা নিজেই চিন্তার সঙ্গে communicate করে নিক। আমরা শুধু ব্রহ্মের জয়গান করব।
আর যেভাবে একটি অণুগল্প লেখার সময় লেখক তাকে ফেবু পোষ্ট নয় বা messenger whatsapp post মনে করেন না শিল্পই মনে করেন তেমন বা তার থেকে ফর্মে একটু কম গুরুত্ব দিলেও বাম্পার চলে যাবে অণুপ্রবন্ধ। তাছাড়া অমিতাভ প্রহরাজ তো comments whatsapp message messenger post এর মধ্যেই এখন শিল্পের বীজ আর বাংলা লেখার ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন। 
পাঠক এবার কলারতোলাহীন এই প্রস্তাবটিকে বিবেচনা করুন।


রামায়ণ বিষয়ক অনুপ্রবন্ধ ৫ : রাম নাম সত্য হ্যায়

কিছু কিছু নিউরোটিক থাকেন যাদের কিছু কিছু নামের উচ্চারণের ক্ষেত্রে মানসিক অসুবিধা হয়। বিশেষ বিশেষ শব্দতে তারা হয়তো তোৎলান বা সেই শব্দগুলোকে এড়িয়ে চলতে চান। তাই সেই সব শব্দ বলতেই হলে তারা সেগুলিকে ডিসটর্ট করে বলেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় এক বিবাহিতা নারীর সন্দেহ ছিলো তার স্বামী ধরা যাক দুর্গা নামের কোন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। সুতরাং তিনি দুর্গা পুজো মন্দির বা দুর্গা নামের কোন রাস্তা বা স্থানে যেতে চাইতেন না বা যেতে বাধ্য হলে অস্বাভাবিক আগ্রাসী আচরণ করতেন। কার্ল ইয়ুং বলেছেন সত্যিই ঈশ্বর আছেন কিনা তিনি জানেন না কিন্তু মানসে একজন ঈশ্বর অবশ্যই আছেন। ভূত কিন্তু এক মানসিক অবস্থা । ভূতে ভর করা ইত্যাদি ভারতীয় সমাজে স্বাভাবিক মনে করা হলেও এগুলি স্কিৎসোফ্রনিয়া বা অ্যাটেনশন সিকিং জাতীয় মনোরোগএই জায়গা থেকেই ভূতের মুখে রাম নাম কথাটি বা রাম নামে ভূত ভয় পায় জাতীয় ধারণা জনমানসে প্রচলিত। ভূতের ফোবিয়ারাম এই শব্দে। তাদের এই নামে রয়েছে tremendous complex sensitivity. যেভাবে অশুভশক্তিদের এমনকি স্বপ্নেও ত্রাস ছিলেন রাম (ত্রিজটা) অর্থাৎ রাম শব্দটি উচ্চারণ করলেই তেনাদের বংশনাশী মৃত্যুভীতি তৈরি হয় ( ফোবিয়া ) তার থেকে তাদের signifier রামচন্দ্র ত্রেতাতেই অবলুপ্ত হয়ে গেলেও এই signified রাম শব্দটিই এমনভাবে মনে কমপ্লেক্সের জন্ম দিয়েছে যে তারা রাম নাম শুনলেই ভয় পায় বলে ধারণা। একে learned conditioned দুভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়। এই phobia কে। এক রাম এক এক করে রাবণের অগুন্তি বংশনাশ করে চলেছে তো রাম কে ভাবা আর মৃত্যুবরণ করা যেন সমার্থক। একটির (রাম শব্দ) কথা ভাবলেই অন্যটি মৃত্যুভয় আপনা থেকেই জাঁকিয়ে বসছে। অন্যটি হল learned. অন্যকে দেখা যে রাম নাম শুনলে অশুভ ভর হওয়া ব্যক্তি ভয় পাচ্ছে, সেটা দেখে শেখা যে রাম নামে ভূত ভয় পায়। যাকে দেখে শিখছে সেও আবার তার পূর্বজদের দেখেই এটা শিখেছে। এটি এক একটি সমাজের ট্রাডিশান। আমাদের একটা গোটা জাতি পবিত্রতম শব্দ হিসাবে এই নাম জ্ঞান করেন। আর সেই ট্রাডিশান মেনেই পাপী রত্নাকর রাম নাম উচ্চারণ করতে পারে না। সে মরা মরা মরা বলতে থাকে।
ব্যক্তিগতভাবে বলি যে আমার রাম নাম উচ্চারণ করতে খুব অসুবিধা হয়। যেমন অসুবিধা হয় আমার এক মাত্র প্রাক্তন প্রেমিকার পুরো নাম উচ্চারণ করতে। দুটোই বোধহয় এই কারণে যে এই দুই নামের সঙ্গে আমার জ্বলন্ত অঙ্গারের মতো ইমোশান জমে আছে। তার মুখোমুখি হলে আমার গোটা defence mechanism টাই ভেঙ্গে পড়বে। তাই হাজার বার রাম লিখতে পারি আমি, উচ্চারণ করতে পারি না!! সত্যিই রাম নাম পাপীর জন্য নয়!!!




রামায়ণ বিষয়ক অনুপ্রবন্ধ ৬ : রামায়ণের আগে মহাভারত ও  রামের বিরুদ্ধে কৃষ্ণ

সুকুমারী ভট্টাচার্যের মতে, রামায়ণের রচনাকাল খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় বা দ্বিতীয় থেকে খ্রিষ্টিয় দ্বিতীয় বা তৃতীয় শতকের মধ্যে। মহাভারত সেখানে খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম বা চতুর্থ শতকে শুরু আর শেষ খ্রিষ্টিয় চতুর্থ বা পঞ্চম শতকে। অর্থাৎ মহাভারত লেখা শুরু হয় রামায়ণের আগে আর শেষ হয় রামায়ণ পূর্ণাঙ্গতা পাওয়ার অন্তত ৩০০ বছর পরে। এমনকি দ্বাপরকে দ্বিতীয় যুগ আর ত্রেতাকে তৃতীয় যুগ হিসাবেও ( root analysis করে )  পণ্ডিতেরা দেখিয়েছেন মহাভারত রামায়ণের পূর্ববর্তী। এবার এর সপক্ষে তো আমার মতো হাজার যুক্তি বিস্তার করা যায়। প্রথমত তো রামায়ণের cast system মহাভারতের থেকে অনেক বেশি কঠোর যেখানে রাম বৈদিক তপস্যা করার জন্য শম্বুকের শিরোচ্ছেদ করছেন সেখানে গীতায় কর্মের ভিত্তিতে বর্ণাশ্রমকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন কৃষ্ণ
দ্বিতীয়ত রামায়ণ অনেকবেশি পিতৃতান্ত্রিক মহাভারতের থেকে। মহাভারতে আমরা এক সে বড় কর এক মহীয়সী নারী পাচ্ছি। কুন্তী, গান্ধারী, দ্রৌপদী, হিড়িম্বা, চিত্রাঙ্গদা ... সহস্র মুখে সে নারীমাহাত্ম্য জয়গান করে। সেখানে এমনকি দশরথ কৈকেয়ী সম্পর্কও বেসিক্যালি পিতৃতন্ত্রের এসেন্স অতিক্রম করতে পারে না। রাবণ তৎকালীন অন্যতম বিদূষী সীতাকেই বলছেন “পণ্ডিতমন্যা”!!
আর মহাভারত যে রামায়ণের পরে শেষ তাই বা বুঝবো কি করে? স্পষ্টতই রাম pro ইন্দ্র, রাম ইন্দ্র personifiedরাম পর্জন্য আর সীতা কৃষিক্ষেত্র। এ কেবল কৃষিভিত্তিক সমাজব্যবস্থার প্রতীকায়ন। তাই রাম বেদপ্রচারক, রাম ঋষিপূজক, রাম কেবল শস্ত্রধারী, সোচ্চারভাবে দার্শনিক নন। কারণ তিনি নতুন কিছু বলতে আসেননি। তিনি বৈদিক ধর্মপ্রচার করতে এসেছেন। কিন্তু বিপ্রতীপে কৃষ্ণ বেদবিরোধী মূলত সাংখ্যভিত্তিক নতুন যুগের নতুন দর্শন দিচ্ছেন। মীমাংসা থেকে ভিন্ন কর্মের দর্শন, ভক্তির দর্শন। মূলত এই গীতা রচনাকার হলেই কৃষ্ণ ষোলো কলা অবতারের স্ট্যাটাস পেতেন না। বড়জোর রামানুজ কি শঙ্কর হয়ে থেকে যেতেন! তার জীবনে নিজে আচরি ধর্ম ... মোট মহাভারতকে এমনভাবে সাজিয়েছেন কৃষ্ণ যে গীতাকে সরিয়ে নিলেও বাকি মহাভারত থেকে কৃষ্ণ জবানীতে আমরা গীতার মূল দর্শনকে পেয়ে যাব। কৃষ্ণ অ্যান্টি বৈদিক দেবতার কালচার। ইন্দ্রের ও ব্রহ্মার সঙ্গে বারবার তার বৃন্দাবনে সংঘাত, পরবর্তীকালেও সামান্য পারিজাত পুষ্প নিয়েও ঘোর ইন্দ্র কৃষ্ণ যুদ্ধ ঘটেছে। কৃষ্ণ অ্যান্টি ঋষিও। দুর্বাসার শাপ থেকে পাণ্ডবদের রক্ষা করছেন তিনি। এমনকি নতুন সময়ের দাবি অনুযায়ী শুধু আর্য অনার্য দ্বন্দ্বের বদলে দর্শন কর্ম ধর্ম সম্বনবয়ে  প্রথম দূরদর্শী রাজনৈতিকভাবে ঐক্যমত্য ভারতের স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। ভীষ্ম, জরাসন্ধ, দ্রৌপদ, দ্রোণ, ধৃতরাষ্ট বা এমনকি প্রাণপ্রিয় পাণ্ডব বা তাদের সন্তান ... সকলকে একা হাতে পুতুলনাচে শেষ করে নতুন যুগের স্থাপন করাই তার আসল অভিসন্ধি। এমত প্রাজ্ঞতা আমরা রামে পাইনি, এমত দর্শনও পাইনি। রাম সীতা রামায়ণ নেচার মিথ। কৃষিগাথা। আবার কৃষ্ণ শিল্পের পক্ষে। তার প্রধান অস্ত্র চক্র। তিনি ইন্দ্রের তথা শুধুই কৃষির উপর নির্ভরতার বিরোধিতা ঘোষণা করে গোবর্ধন তুলছেন বা খনিজ দ্রব্য বিকল্প জীবিকা ইত্যাদির সন্ধান করছেন। তিনি সেই চক্র প্রথম পাচ্ছেন ও ব্যবহার করছেন ইন্দ্রেরই বিপক্ষে তার বৃষ্টির ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে খাণ্ডব বন দহন করে। কৃষিপ্রধান বৈদিক ভারতে প্রথম বৃষ্টির বন্দনা করার বদলে বৃষ্টির বিরুদ্ধে কাউকে যেতে দেখলাম আমরা। কৃষি ও প্রাচীন জীবিকা ব্যবস্থা থেকে বেড়িয়ে এসে বন ধ্বংস করে তিনি নতুন সভ্যতা স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন। তিনি প্রাচীনতার মূর্ত প্রতীক অচলায়তন ভীষ্মকে মারতে চেয়ে নিজের প্রতিজ্ঞা ভুলে গোটা কুরুক্ষেত্রে মাত্র একবারই সেই রথের চাকাই তুলে নিচ্ছেন অর্থাৎ নতুন যুগ সূচনা তার শিল্পের মন্ত্রে।  এমনকি যেখানে তার রাজধানী তিনি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তা বর্তমান ভারতেরও অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পপীঠ । স্বভাবতই তিনি প্রাকৃতিক সম্পদবতী মথুরাকে ততটা গুরুত্ব দেননি। যেখানে মহাভারত শেষ হয় সেই সময়ের জটিলতা তাই রামায়ণ অপেক্ষা অনেক বেশি। সেই যুক্তিতেই কৃষ্ণ শ্রেষ্ঠ অবতার হয়ে থাকেন। 





রামায়ণ বিষয়ক অনুপ্রবন্ধ ৭ : রামায়ণে চার্বাককথা

কমবেশি আমরা চার্বাক মত জানি। তারা হলেন প্রাচীন ভারতীয় ম্যাটিরিয়ালিষ্ট। তারা বেদ মানে না, পরলোক মানে না, আত্মা , পাপ পুণ্য বা ঈশ্বর মানে না, যা হেতুবাদ বা যুক্তি দ্বারা প্রমাণ করা যায় না ( প্রত্যক্ষ ) তা তারা মানে না। ইন্দ্রিয় ও ঐহিক সুখই তাদের চরম লক্ষ্য। তাদের সেই বিখ্যাত কোট... “ঋণং কৃত্বা  ঘৃতং পিবেৎ”। তারা চারুবাক অর্থাৎ খুব ভালো যুক্তি সাজাতে পারে। তাই তাদের গাল পেড়ে বলা হয়েছে আনবিক্ষীকি, যারা এঁড়ে তক্ক করে! অযোধ্যাকাণ্ডে জাবালি রাম কথোপকথনে আমরা যে এভাবে চার্বাক দর্শনকে পেয়ে যাবো তা ভাবা যায়নি! জাবালি বলছেন শ্রাদ্ধ করা হল অন্নের অপচয়। যদি দূরাত্মীয়ের উদ্দেশ্যে অন্ন উৎসর্গ করা হয় তাতে যেমন তার পেট ভরে না তেমন মৃতের উদ্দেশ্যে পিণ্ডি দিলেও সে তা খেতে পারে না। শাস্ত্রে যে যজ্ঞ, দান ইত্যাদির উল্লেখ আছে লোক ঠকানোর জন্যই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তা প্রস্তুত করা হয়েছে। “ পরলোকসাধন ধর্মনামে কোন পদার্থই নাই... তুমি প্রত্যক্ষের অনুষ্ঠান ও পরোক্ষের অননুসন্ধানে প্রবৃত্ত হও “!!! এবং এগুলো বলা হচ্ছে রামায়ণে!!! স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে জাবালি এই মত বিশ্বাস করেন এবং এই কথাগুলি রামকে বোঝানোর জন্যই অযোধ্যা থেকে তাকে বয়ে আনা হয়েছে। যদিও রাম নিজের আর্দশেই চলেছেন এবং জাবালিকে তিরস্কারে উদ্ধার করে দিয়েছেন। তার বুদ্ধিকে বেদবিরোধিনী বলেছেন। তখন কিন্তু ঢোক গিলে জাবালি বলছেন তিনি আস্তিকও নন, নাস্তিকও নন ( তখন আস্তিক বা নাস্তিক হত যে বেদ মানে বা মানে না তার উপর, ঈশ্বরে বিশ্বাসের ভিত্তিতে নয়)। সময় সুযোগ বুঝে তিনি আস্তিক আবার নাস্তিক হন!! আবার ভাবুন তিনি কিন্তু দশরথের যাজকবিশেষ। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে যে রাম যদি সেই লোকসমাজে প্রচলিত লোকায়তিক মত মেনে নিয়ে অযোধ্যা ফিরেও যেতেন তাতেও কেউ কিছু রামায়ণ অশুদ্ধ বলতো না অর্থাৎ তা যথেষ্ট শক্তিশালী মতাদর্শ এমনকি রামেরই অযোধ্যায়!! ঠিক একইভাবে এই অংশে রামের মুখে আমরা বৌদ্ধমতের উল্লেখও পাচ্ছি এবং তার মতো বৈদিকদের কাছে “ বৌদ্ধ তস্করের ন্যায় দণ্ডার্হ “ । আবার বালীর মৃত্যশয্যায় গর্বভরে রাম বলেছেন ইক্ষবাকু বংশের কুলপুরুষ মান্ধাতা ( যার থেকে চালু কথা মান্ধাতার আমল ) কোন এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে বালীর মতই ভাতৃবধূভোগপাপে দণ্ডপ্রদান করেছিলেন ও আরো কিছু অপমানজনক যেহেতু একে বৌদ্ধ তায় সন্ন্যাসী তাতে আবার তৎকালীন সমাজ নিন্দিত এমত যৌনব্যভিচার! অবশ্য বৌদ্ধরা কিন্তু অতি আপনভাবেই রামকে গ্রহণ করেছে তাদের জাতকের গল্পের অন্যতম কাহিনী দশরথজাতক যেখানে রাম রামমুনি  





No comments:

Post a Comment