।। বাক্‌ ১২৩ ।। রঞ্জিত সিংহ ।।







রঞ্জিত সিংহ-র কবিতা



ধর্মচিন্তা

শুকনো আলোর তলে হৃৎপিণ্ডটা দপদপ করছে।
এত ঘন মাকড়সার জাল, সার্জেনের ছুরি পৌছচ্ছে না ।
সার্জন ডাকল অ্যাসিস্ট্যান্টকে, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাকল মেট্রনকে
মেট্রন নার্সকে, নার্স বেয়ারাকে।
বেয়ারা তক্ষুনি ঝুলঝাড়ার বাঁশ এনে মাকড়সার জালটা ভেঙে দিল।
সার্জেন হৃতপিন্ডটাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ছুরির ডগায় যা তুলে আনল
সেটা নাইকুন্ড।
সে কী! বুকের বাঁপাশে নাইকুন্ড?
লোকটা এতদিনেইভাবে বেঁচে আছে!
নাইকুন্ডের ধুকপুকুনিতে হৃদযন্ত্রের কাজ!
সমস্ত মেডিক্যাল সায়েন্স বোবা, কনফারেন্স,
মেডিক্যাল বোর্ড, মন্ত্রী, আমলা।
সর্বত্র পেশেন্ট  প্রধান ইনভাইটি – বিনাভ্রূক্ষেপে স্বচ্ছন্দে
যে মিটিং-এ যেমন, কফি –সন্দেশ, মাংসের বড়া, অমলেট
গপাগপ সে খেয়ে চলেছে।
মশাই, আপনার বয়সটা আসলে কত?
হাসালেন দেখছি, আসল আবার কী বস্তু?
পৃথিবীটাই তো নকল- এই মানুষজন-জীবজন্তু-গাছপালা
সবই তো নকল।
সত্যি হাসালেন। আপনি কি?
বলেই ডাক্তারের জীভ ধরে এক টান ।
একটা কেউটে ফণা তুলে মন্ত্রী-আমলাদের এক ছোবলে কাত ক’রে
আবার ডাক্তারের মুখের ভিতর জিভ হয়ে দাঁতের প্রাচীরের মধ্যে
ঘুমিয়ে পড়ল।
লেকচার ভঙ্গিতে এবার পেশেন্টই প্রধান বক্তা:
মশাই, নাইকুন্ডই হৃদযন্ত্রের কাজ চালায়,
তাহলে হৃদযন্ত্র? লিভারের কাজ করে,
তাহলে লিভার? মস্তিষ্ক চালায়।
শাস্ত্র? ঐ দেখুন।
দুটো বায়স সেটাকে মুখে করে বেল গাছের মাথায় ব’সে
ঠুকরে ঠুকরে তখন খাচ্ছিল।

এই দৃশ্য দেখা মাত্র
আটারলি বাটারলি ডিলিশাস ঃ
একটা এলোপাতাড়ি মস্করায় অগাধ শান্তিতে ঢলে পড়ল।



No comments:

Post a Comment